থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ। শতাধিক মিলিয়ন কপি বিক্রয় হওয়া বইটি প্রায় ৮৪ বছর পরও আজও সারাবিশ্বে সমান জনপ্রিয়। তাঁর এই বইটি লেখার পেছনে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে এসেছিলেন অ্যান্ড্রু কার্ণেগী, উনিশ শতকের প্রথম দিকে যিনি যথেষ্ট ধনী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কার্ণেগী তাঁকে বলেছিলেন, তিনি বিশ বছরের বেশি সময় নিয়ে সেইসব মানুষকে জানার ব্যাপারে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারবেন কিনা যারা কোনোরকম গোপনীয় টোটকা ছাড়াই ব্যর্থতার মাঝে দিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়েছেন। হিল এই প্রশ্নের প্রতিত্তোরে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে কাজ শুরু করে দেন। সেই কাজের ফলাফলই এই বইটি৷ এই বইতে সেই গোপনীয়তার কথা বলা হয়েছে, যেখানে সহস্রাধিক মানুষকে পরীক্ষা করা হয়েছে,জীবনের প্রতিটি দিক ছুঁয়ে দেখা হয়েছে। এই বইটি হিলের প্রকাশিত নবম গ্রন্থ৷
এক নজরে
বইয়ের নাম: Think and Grow Rich
মূল ভাষা : ইংরেজি
জনরা: আত্মউন্নয়ন, অনুপ্রেরণামূলক
লেখক: নেপোলিয়ন হিল
প্রথম প্রকাশ: ১৯৩৭
প্রকাশনী : নেপোলিয়ন হিল ফাউন্ডেশন
বাংলায় অনুবাদ : অনীশ দাশ অপু (মে, ২০১৬)
বাংলা অনুবাদ পৃষ্ঠা : ১৭৫
মূল্য : ২৫০ টাকা
লেখকনামা
নেপোলিয়ন হিল : দক্ষিণ পশ্চিম ভার্জিনিয়ার পাউন্ডে হিলের জন্ম হয়েছিল ১৮৮৩ সালে এক অতি দরিদ্র পরিবারে। শৈশবেই মাকে হারিয়েছিলেন তিনি। তরুণ হিলের পেশাজীবন শুরু হয় স্থানীয় সংবাদপত্রে মাউনটেন রিপোর্টার হিসেবে।
নেপোলিয়ন হিল
১৯০৮ সাল থেকে নিজ নিজ পেশায় সফল এবং বিখ্যাত ব্যাক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করেন হিল। প্রকাশিত হতে থাকে তাঁর বইও৷ ৮৭ বছর বয়সে ১৯৭০ সালের নভেম্বরে হিল দক্ষিণ ক্যারালাইনায় নিজের অন্য একটি বইয়ের কাজ করার সময় মারা যান৷
কেন পড়া উচিত বইটি?
আমরা সকলেই বোধহয় জীবনের কোনো একটা সময়ে হতাশায় ডুবে যাই। ব্যর্থতা কিংবা পথ হারানোর গল্পে নিজেদের বিষন্নতা আমরা লুকিয়ে রাখতে পারি না। ঠিক করতে পারি না আসলে কী করা উচিত আর কী উচিত নয়৷ জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে যাওয়ার সময়টায় আমরা নিজেদের লক্ষ্য থেকে যোজন যোজন দূরে সরে যাই নিজেদের অজান্তেই। সে সময় আমরা একটুখানি অনুপ্রেরণা খুঁজি, চাই নতুন করে সব কিছু গড়ে তুলতে। সেই অনুপ্রেরণাই হয়তো হতে পারে নেপোলিয়ন হিলের বিখ্যাত এই বই, থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ। এই বইয়ের সবচেয়ে ভালো লাগার ব্যাপার হচ্ছে, এখানে লেখকের কোনো মনগড়া কথা নেই। তিনি যা-ই বলেছেন বাস্তব অভিজ্ঞতা কিংবা সাক্ষাৎকার থেকে জেনে বলেছেন। তাই পরামর্শগুলো সব পরীক্ষিত৷ তার এই বই লেখার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী অ্যান্ড্রু কার্ণেগী। তিনি সাফল্যের পেছনে একটি গোপন রহস্যের কথা বলেছিলেন, যা এই বইয়ে বারবার এসেছে। তবে গোপনীয়ভাবেই। সেই রহস্য খুঁজে বের করতে হবে আপনাকেই৷
বইটি কেনও পড়তে হবে সে প্রশ্নে আমি দুটো কারণ উল্লেখ করতে চাই।
প্রথম কারণ।
১৯১৩ সালে হিলের এক ছেলে সন্তান হয়েছিল। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে তার কান ছিল না। ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন, সে স্বাভাবিকভাবে কখনো শুনতে পাবে না। তবু আশা ছাড়েন নি হিল। তিনি যখন বইটি লিখছিলেন সে সময় তার ছেলে কলেজের প্রথম বর্ষ শেষ করেছে৷ সে সময় বইটির পান্ডুলিপিটি পড়তে গিয়ে সে নিজেও সেই সিক্রেটটি আবিষ্কার করে ফেলে৷ সে তথ্যটি এত চমৎকারভাবে কাজে লাগায় যে তার ভালো বেতনের একটি চাকরি হয়ে যায়৷ সেই সাফল্যের গল্পও নেপোলিয়ন হিল তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন।
দ্বিতীয় কারণ।
হিল নিজেই বলেছেন, এই বই পড়েই রাতারাতি আপনি সাফল্য পেয়ে যাবেন এমন নয়। এখানে শুধু ফ্যাক্টস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার যদি ভাবনার জগতে বিস্তৃতি থাকে, থাকে যদি বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা তাহলে আপনিও এই বই পড়ে নিজেকে নতুন করে জানতে পারবেন। সেই জানাটা হয়তো আপনার চলার পথই বদলে দেবে। হিল অসংখ্য মানুষের সাথে কথা বলেছেন, যারা সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়ায় গিয়েছেন। তিনি সকলের ক্ষেত্রেই দেখেছেন, তাঁরা সকলেই একটি আইডিয়া নিয়ে শুরু করেছিলেন।
হিল বলছেন, সাফল্যের যে সিক্রেট নিয়ে তারা সাফল্য পেয়েছেন সেই সিক্রেটের কথা তিনি বইটির প্রতিটি অধ্যায়েই উল্লেখ করেছেন। তিনি নিজেই সরাসরি বলে দিতে পারতেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনারা আবিষ্কারের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে ধারণা ছিল তাঁর।
চলুন, তাহলে পড়া যাক বিখ্যাত সেই বই।
TmA রেটিং!
৯/১০
বইটি পড়তে চান?
মূল বইটি ক্রয়ের লিংক:
>> অ্যামাজন (প্রথম সংস্করণ)
>> অ্যামাজন (২০০৫ সংস্করণ)
>> অনুবাদ ক্রয়ের লিংক : রকমারি
>> বাংলা অনুবাদ ডাউনলোড লিংক : TmA Library
>> ইউটিউব পডকাস্ট : Link
কেমন লাগলো বইটি পড়ে? কী সেই সিক্রেট? এই বইটি সম্পর্কে আপনার যে কোনো মতামত আমাদের জানাতে পারেন ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে।
এই বিভাগের লেখা নিয়মিত পেতে যুক্ত থাকুন আমাদের ফেসবুক পেইজে