জাদু টোনা- তাবিজের প্রভাব থেকে মুক্তির উপায় | TmA

 



জাদু টোনা- তাবিজের প্রভাব থেকে মুক্তির উপায় | TmA 

জাদু টোনা কিংবা তাবিজের প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য ইসলাম সম্মত বেশ কিছু উপায় রয়েছে।  সে সম্পর্কে বিস্তারিত এই লেখায় আলোচনা করার চেষ্টা থাকবে। 

আরোগ্য লাভে রাসূল (সাঃ) যে দোয়াটি পড়তেন সেই দোয়াটি নিয়মিত আমল করা উচিত৷ 


দোয়াটি হলো- 


“আল্লাহুম্মা, রাব্বান নাস! আযহিবিল বা’স। ওয়াশফি, আনতাশ শাফি। লা শিফাআ ইল্লা শিফাউক। শিফাআন লা য়ুগাদিরু সাকামা।”


(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)


হজরত ওয়াহাব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি জাদু-টোনার শিকার হয়, তাঁকে জাদুর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হলে নিম্নোক্ত আমলটি করতে হবে। আর তা হলো-কুলের সাতটি পাতা পাটায় বেটে পানিতে মিশাতে হবে। অতঃপর আয়াতুল কুরসি পড়ে (এর সাথে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়া যেতে পারে) ওই পাটা পাতার ওপর ফু দিতে হবে। সেগুলো পানির সঙ্গে মিশাতে হবে। তা থেকে জাদুকৃত ব্যক্তিকে তিন ঢোক পানি পান করাতে হবে।অবশিষ্ট পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। ইনশাল্লাহ! এ আমলের কারো প্রতি জাদু ক্রিয়া হয়ে থাকে; তবে তা নষ্ট হয়ে যাবে।


জিব্রাইল (আঃ) রাসূল (সাঃ)কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে। সে দুআটি হচ্ছে- 


“বিসমিল্লাহি আরক্বিক মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক। ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহি আরক্বিক।”


(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)


এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। আমরা যে দোয়াগুলো উল্লেখ করলাম এ দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে। আলেমগণ এ আমলগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন। 



জাদু ক্রিয়া নষ্ট করার সবচেয়ে বড়ি চিকিৎসা হলো- সুরা ফালাক্ব ও সুরা নাস।হাদিসে এসেছে, ‘এ সুরাগুলোর চেয়ে বড় রক্ষাকবচ আর নেই। আর আয়াতুল কুরসিও শয়তানকে দূর করার জন্য বড়ই ফলদায়ক। 


যাদুগ্রস্ত রোগী ও স্ত্রী সহবাসে অক্ষম করে দেয়া ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য বরই পাতার পানিতে যে আয়াত ও দোয়াগুলো পড়তে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:


১. সূরা ফাতিহা 


বিসমিল্লাহির রাহমা-নির রাহি-ম। আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’-লামি-ন। আররাহমা-নির রাহি-ম। মা-লিকি ইয়াওমিদ্দি-ন। ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কা নাসতাই’-ন। ইহদিনাস সিরাতা’ল মুসতাকি’-ম। সিরাতা’ল্লা যি-না আনআ’মতা আ’লাইহিম। গা’ইরিল মাগ’দু’বি আ’লাইহিম ওয়ালা দ্দ—ল্লি-ন।


২. আয়াতুল কুরসি তথা সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত পড়া।


আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম। 


৩. সূরা আরাফের যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো (১০৬-১২২) পড়া।


ক্ব-লা ইন্ কুন্তা জিতা বিআ-ইয়াতিন্ ফাতি বিহা য় ইন্ কুন্তা মিনাছ্ ছোয়া-দ্বিকীন্।ফাআল্ক্বা-‘আছোয়া-হু ফাইযা-হিয়া ছু’বা-নুম্ মুবীন্।অনাযা‘আ ইয়াদাহূ ফাইযা-হিয়া বাইদ্বোয়া-উ লিন্না-জিরীন্। ক্ব-লাল্ মালাউ মিন্ ক্বওমি র্ফি‘আউনা ইন্না হা-যা- লাসা-হিরুন্ ‘আলীম্। ইয়ুরীদু আইঁ ইয়ুখ্রিজ্বাকুম্ মিন্ র্আদ্বিকুম্, ফামা-যা- তামুরূন্। ক্ব-লূ য় র্আজ্বিহ্ অআখা-হু অর্আসিল্ ফিল্ মাদা - য়িনি হা-শিরীন্। ইয়াতূকা বিকুল্লি সা-হিরিন্ ‘আলীম্।অজ্বা - য়াস সাহারাতু র্ফি‘আউনা ক্ব-লূ য় ইন্না লানা-লাআজরান্ ইন্ কুন্না নাহ্নুল্ গ-লিবীন্। ক্ব-লা না‘আম্ অইন্নাকুম্ লামিনাল্ মুর্ক্বারবীন্। ক্ব-লূ ইয়া-মূসা য় ইম্মা য় আন্ তুল্ক্বিয়া অইম্মা য় আন্ নাকূনা নাহ্নুল্ মুল্ক্বীন্।ক্ব-লা আল্ক্ব ফালাম্মা য় আল্ক্বও সাহারূ য় আ’ইয়ুনান্ না-সি অর্স্তাহাবূহুম্ অজ্বা - ঊ বিসিহ্রিন্ ‘আজ্বীম্। অআওহাইনা য় ইলা-মূসা য় আন্ আল্ক্বি ‘আছোয়া-কা, ফাইযা-হিয়া তাল্ক্বফু মা- ইয়া ফিকূন্। ফাঅক্বা‘আল্ হাককু অবাত্বোয়ালা মা-কা-নূ ইয়া’মালূন্। ফাগুলিবূ হুনা-লিকা অন্ক্বালাবূ ছোয়া-গিরীন্। অ উল্ক্বিয়াস্ সাহারাতু সা-জ্বিদীন্। ক্বা-লূ য় আ-মান্না-বিরব্বিল্ ‘আ-লামীন্। রব্বি মূসা-অহারূন্।


৪. সূরা ইউনুসের যাদুবিষয়ক আয়াতগুলো (৭৯-৮২) পড়া।


অক্ব-লা ফির‘আউনুতূনী বিকুল্লি সা-হিরিন্ ‘আলীম্।ফালাম্মা য় জ্বা - আস্ সাহারাতু ক্ব-লা লাহুম্ মূসা য় আল্ক্ব মা য় আন্তুম্ মুল্ক্ব ন্।ফালাম্মা য় আল্ক্বও ক্ব-লা মূসা-মা-জ্বি তুম্ বিহিস্ সিহ্র্; ইন্নাল্লা-হা সাইয়ুব্ ত্বিলুহ্; ইন্নাল্লা-হা লা-ইয়ুছ্লিহু ‘আমালাল্ মুফ্সিদীন্।অইয়ুহিক্ব্ কুল্লা-হুল্ হাক্বক্ব বিকালিমা-তিহী অলাও কারিহাল্ মু জ্বরিমূন্। 


৫. সূরা ত্বহা এর আয়াতগুলো (৬৫-৬৯) পড়া। 


ক্ব-লূ ইয়া মূসা য় ইম্মা য় আন্ তুল্ক্বিয়া অইম্মা য় আন্ নাকূনা আওঅলা মান্ আল্ক্ব-। ক্ব-লা বাল্ আল্ক্ব ফাইযা-হিবা-লুহুম্ অ ‘ইছিয়্যুহুম্ ইয়ুখইয়্যালু ইলাইহি মিন্ সিহ্রিহিম্ আন্নাহা-তাস্‘আ।ফাআওজ্বাসা ফী নাফ্সিহী খীফাতাম্ মূসা-।ক্বুল্না-লা-তাখাফ্ ইন্নাকা আন্তাল্ ‘আলা-। অ আল্ক্বি মা-ফী ইয়ামীনিকা তাল্ক্বফ্ মা-ছোয়ানা‘ঊ; ইন্নামা- ছোয়ানা‘উ কাইদু সা-র্হি; অলা -ইয়ুফ্লিহুস্ সা- হিরু হাইছু আতা-।


৬. সূরা কাফিরুন পড়া।


কুল ইয়া আইউহাল কাফিরূন। লা আ’বুদু মাতাবুদুন। ওয়ালা আনতুম আবিদুনা মা আবুদ। ওয়া লা আনা আবিদুনা মা আবাদতুম। ওয়ালা আনতুম আবিদুনা মাআবুদ। লাকুম দীনুকুম ওয়ালীয়া দ্বীন। 


৭. সূরা ইখলাস (৩ বার) 


কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুচ্চামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।


৮. সূরা ফালাক (৩ বার) 


ক্বুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক। মিন শাররি মাখালাক্ব। ওয়া মিন শাররি গাসিক্বিন ইযা অক্বাব। ওয়া মিন শাররিন নাফ্ফাসাতি ফিল্ উকাদ। ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ।  



৯. সূরা নাস (৩ বার) 


কুল আউযু বিরাব্বিন নাস।মালিকিন্ নাস।ইলাহিন্ নাস। মিন্ শররিল ওয়াস্ ওয়াসিল খান্নাস।আল্লাযী ইউওযাসবিসু ফী ছুদুরিন্নাস। মিনা জিন্নাতি ওয়ান্নাস। 


১০. কিছু দোয়া দরুদ পড়া। যেমন-


“আল্লাহুম্মা, রাব্বান নাস! আযহিবিল বা’স। ওয়াশফি, আনতাশ শাফি। লা শিফাআ ইল্লা শিফাউক। শিফাআন লা য়ুগাদিরু সাকামা।” [৩ বার]


বিসমিল্লাহি আরক্বিক মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক। ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহি আরক্বিক।”[৩ বার]



পূর্বোক্ত আয়াত ও দোয়াগুলো যদি সরাসরি যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপরে পড়ে তার মাথা ও বুকে ফুঁক দেয় তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাময় হবে।


tags: জাদুর প্রভাব থেকে মুক্তি লাভের উপায়,যাদুটোনা থেকে নিরাময়ের উপায়,যাদু, বান মারা, জ্বীন চালান, তাবিজ এবং বদ নজর থেকে মুক্তির উপায়,যাদু-টোনা তাবিজ করেছে কিনা সেটা কিভাবে বুঝব,তাবিজ করলে মুক্তি পাওয়ার উপায়,tma,tmabd, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব,সূরা ইউনূস, দোয়া ইউনূস, আয়াতুল কুরসী, সূরা ফাতিহা,