নামাজ শিক্ষা : ওযুর সঠিক নিয়ম | Odhu Ablution | TmA

 

বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই ইসলাম ধর্মের অনুসারী৷ ইসলামে নামাজ একটি ফরজ ইবাদাত হিসেবে গণ্য। মুসলমানরা নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকেন। ফরজ এই ইবাদাতের মূল বিষয় যেমন জানা জরুরি তেমনি এর খুঁটিনাটি বিষয়গুলোও এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কন্টেন্ট প্লাটফর্ম 'TmA' তাই 'নামাজ শিক্ষা ' নামে নতুন একটি কন্টেন্ট সিরিজ চালু করেছে। এই সিরিজ TmA এর ইউটিউবে চ্যানেলে ভিডিও হিসেবে এবং TmA ওয়েবসাইটে আর্টিকেল হিসেবে দেখতে পাবেন। সিরিজের ২য় পর্বে আজ থাকছে "ওযুর সঠিক নিয়ম"।  


পর্ব-১ ওযুর নিয়ত ও দোয়া 



নামাজের পূর্ব শর্ত হচ্ছে সঠিক উপায়ে অযু করে পাক পবিত্র হয়ে নেওয়া। অযুর কায়দা কানুন সঠিকভাবে না জানলে তাই নামাজই কবুল না হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাই অযুর সঠিক নিয়ম মেনে সহীহ উপায়ে অযু করা জরুরি। 


চলুন অযুর সঠিক নিয়ম জানা যাক- 


ওযুর চার ফরয :


১. সমস্ত মুখমন্ডল কপালের উপরিভাগের চুলের গোড়া হইতে থুতনী পর্যন্ত, এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত ধৌত করা।


২.উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।


৩.চারভাগের একভাগ মাথা মাসেহ করা ( ঘন দাঁড়ি থাকিলে আঙ্গুল দ্বারা খিলাল করা ফরয )।


৪.উভয় পা টাখনু গিরা সহকারে ধৌত করা ।


অযুর নিয়ম 


১/ বিসমিল্লাহ সহকারে অযুর নিয়ত করুন।


২/ প্রথমে উভয় হাতের কবজি পর্যন্ত ধোয়া।


এক্ষেত্রে ডান হাতে পানি নিয়ে ডান হাতের কবজি তিনবার ধৌত করবে। এরপর ডান হাতে পানি নিয়ে বাম হাতের কবজির উপর পানি ফেলে তিন বার ধৌত করতে হবে।


 

স্বপ্নে কী এমন ভয়ংকর ঘটনা দেখেছিলেন রাসূল (সাঃ)? 

৩/ কুলি করা


ডান হাতে পানি নিয়ে গড়গড়া সহকারে কুলি করবে। রোজাদার না হলে গড়গড়া করা সুন্নত। তিনবার কুলি করা সুন্নত। তিন বারের জন্য আলাদা আলাদা তিনবার পানি নিতে হবে।


৪/ নাকে পানি দেওয়া


ডান হাতে নাকে পানি দিবে এবং বাম হাত দ্বারা নাক ঝাড়বে। বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুলের অগ্রভাগ দিয়ে নাক পরিষ্কার করতে হবে। তাছাড়া কনিষ্ঠ ও বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়েও নাক পরিস্কার করা যায়। তিনবার নাকে পানি দেওয়া সুন্নত। রোজাদার না হলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো উত্তম। 


৫/ মুখমন্ডল ধোয়া


 উভয় হাতে পানি নিয়ে সমস্ত মুখমন্ডল ধৌত করতে হবে। এক্ষেত্রে কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ এবং উভয় কানের লতি পর্যন্ত এমনভাবে পানি পৌঁছানো, যাতে উক্ত অঙ্গ থেকে পানি ফোঁটা ফোঁটা নিচে গড়িয়ে পড়ে। তিন বার ধোয়া সুন্নাত।


৬/ দাঁড়ি ও গোঁফ খিলাল


দাঁড়ি ও গোঁফ খুব ঘন হলে শুধু ধৌত করা ফরয। চামড়ায় পানি পৌঁছানো ফরয নয়। দাঁড়ির ভেতরে আঙ্গুল চালিয়ে খিলাল করে নিবে।


৭/ কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত


 উভয় হাত কনুই সহ ধৌত করবে। একবার ধোয়া ফরয, তিনবার ধোয়া সুন্নাত। হাত ধোয়ার সময় আঙ্গুল খিলাল করবে, যাতে আঙ্গুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়। 


৮/ মাথা মাসেহ


 মাথার চার ভাগের একভাগ মাসেহ করা ফরয, সমস্ত মাথা মাসেহ করা সুন্নাত।


এক্ষেত্রে বৃদ্ধ ও তর্জনী আঙ্গুলদ্বয় ব্যতীত অবশিষ্ট উভয় হাতের আঙ্গুলের পেট মাথার মধ্যে ভাগে সামনে হতে পিছন দিকে টেনে নিয়ে যাবে। অতঃপর দুই হাতের তালু মাথার দুই পাশে রেখে পেছন দিক থেকে সামনে টেনে নিয়ে আসবে।


৯/ কান মাসেহ করা


 উভয় হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট দ্বারা দুই কানের পেছনের অংশ মাসেহ করা। এরপর কনিষ্ট আঙ্গুলের অগ্রভাগ দ্বারা কানের ছিদ্র এবং তর্জনী আঙ্গুলের সাহায্যে কানের পাতার ভেতরে অংশ মাসেহ করা সুন্নাত।



১০/ গোড়ালী ও টাখনুসহ পা ধোয়া


 ডান হাত দিয়ে পায়ের অগ্রভাগে পানি ঢালা সুন্নাত। বাম হাত দিয়ে পায়ের সামনে পেছনে এবং তলদেশ মর্দন করবে। পা দিয়ে ঘষে এবং বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে পায়ের আঙ্গুলসমূহ খিলাল করে নিবে।