নামাজ শিক্ষা: অযুর নিয়ত ও দোয়া | TmA


 



অযুর নিয়ত ও দোয়া | TmA


নামাজ শিক্ষা সিরিজ 
পর্ব - ০১

অযু বা ওযু একটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা, স্বচ্ছতা। শরীয়াতের পরিভাষায় পবিত্র পানি দ্বারা শরয়ী পদ্ধতিতে হাত, মুখ, পা ধৌত করা ও (ভিজা হাতে) মাথা মাসেহ করাকে ‘অযু’ বলা হয়ে থাকে। নামাজের পূর্বে অবশ্যই অযু করে নিতে হয়। এছাড়া যে কোনো পবিত্র কাজের পূর্বে অযু করার রেওয়াজ দেখা যায় ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের মধ্যে।  


মুসলমানদের জন্য অযুর গুরুত্ব ঠিক কতটা তা একটি হাদিসের উদাহরণেই স্পষ্ট। 


ইয়াহিয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) .... নু‘আয়ম মুজমির (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। তারপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে বললেন: ‘আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে যে, উযূর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল থাকবে উজ্জ্বল। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।


(সহীহ বুখারী)


অযু করার আগে অযুর জন্য নিয়ত করে নিতে হয়। 


অযুর নিয়ত হলো- 


উচ্চারনঃ নাওয়াইতু আন আতাওয়াজ্জায়া লিরাফয়িল হাদাসি ওয়া ইস্তিবাহাতা লিছছালাতি ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তা’য়ালা।


অর্থ: “আমি নিয়ত করছি যে, নাপাকী দূর করার জন্যে, বিশুদ্ধ রূপে নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহ্ তা'য়ালার নৈকট্য লাভের জন্য।”


অযু শেষে কালিমা শাহাদাত পড়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ সম্পর্কিত একটি হাদিসে আলোকপাত করা যাক।


রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)


কালেমা শাহাদাত--


উচ্চারণ: আশহাদু আল্লাইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহু।


বাংলা অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।’ (মুসলিম মিশকাত)



অযু ভঙ্গের কারণসমূহ 


সাধারণত অযু ভঙ্গের কারণ সাতটি, সেগুলো হলো:


১- পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া।


২- শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ থেকে কোনো কিছু বের হওয়া।


৩- পাগল, বেহুশ বা মাতাল ইত্যাদি কারণে জ্ঞানশূণ্য হওয়া।


৪- পুরুষ বা নারী কর্তৃক তাদের লজ্জাস্থান পর্দা ব্যতীত সরাসরি স্পর্শ করা।


৫- পুরুষ নারীকে বা নারী পুরুষকে কামভাবের সাথে স্পর্শ করা।


৬- উটের গোশত খাওয়া।


৭- যেসব কারণে গোসল ফরয হয় সেসব কারণে অযুও ফরয হয়, যেমন ইসলাম গ্রহণ ও বীর্য বের হওয়া, তবে মারা গেলে শুধু গোসল ফরয হয়, অযু ফরয হয় না।


অযুর মাকরূহসমূহ



অযুর মাকরূহসমূহের অন্যতম হলো:


১- অপবিত্রতা ছিটে অযুকারীর দিকে আসতে পারে এমন অপবিত্র স্থানে অযু করা।


২- অযুতে তিনবারের অধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধৌত করা। কেননা রাসূল (সাঃ) তিন তিনবার ধৌত করেছেন। তিনি বলেছেন,

“অতঃপর যে ব্যক্তি এর অধিক করে সে অবশ্যই জুলুম ও অন্যায় করে।”


৩- পানি ব্যবহারে অপচয় করা। যেহেতু রাসূল (সাঃ) এক মুদ পানি দিয়ে অযু করেছেন। আর মুদ হলো এক মুঠো। তাছাড়া যেকোনো কিছুতে অপচয় করা নিষেধ।


৪- অযুতে এক বা একাধিক সুন্নত ছেড়ে দেওয়া; কেননা সুন্নত ছেড়ে দিলে সাওয়াব কমে যায়। তাই সুন্নতের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিৎ, ছেড়ে দেওয়া অনুচিত।





tags: ওযুর গুরুত্ব ও উপকারিতা,অযুর ফরজ কয়টি,অযুর দোয়া ও নিয়ত, অযুর দোয়া বাংলা উচ্চারণ সহ, অযুর দোয়া,ওযুর নিয়ত,উযুর নিয়ত,tma,tmabd,