কেন রাজধানী পরিবর্তন করছে ইন্দোনেশিয়া | TmA

নুসানতারা

 
রাজধানী পরিবর্তন করছে ইন্দোনেশিয়া। বর্তমান রাজধানী জাকার্তার পরিবর্তে নতুন রাজধানী হবে দেশটির অন্যতম দ্বীপ জাভার পূর্ব দিকে অবস্থিত পূর্ব কালিমানতাংয়ে। নতুন রাজধানীর নামকরণ করা হয়েছে নুসানতারা, এর অর্থ ‘দ্বীপপুঞ্জ’।


গত ১৮ জানুয়ারি দেশটির পার্লামেন্ট নতুন রাজধানী স্থাপনের বিষয়ে আইন পাস হয়েছে। তবে নতুন রাজধানী কেবল প্রাশাসনিক কাজেই ব্যবহৃত হবে। জাকার্তা আগের মতোই দেশটির বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহ্ত হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। 


২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডন্ট জোকো উইদাদো জাকার্তার পরিবেশগত ঝুঁকি এবং সম্পদের পুনর্বণ্টনের জন্য রাজধানী পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়। নতুন আইন পাস হওয়ায় ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটি রাজধানী স্থানান্তর করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নতুন রাজধানী নির্মাণের কাজ এ বছরই শুরু হবে। 


মিনিকেট নামে কোনো চাল নেই! 


যানজটের কারণে জাকার্তার দুর্নাম রয়েছে। ২০১৬ সালের এক জরিপে বলা হয়েছিল, বিশ্বের বড় বড় শহরের যানজটের দিক দিয়ে জাকার্তার অবস্থান শীর্ষে। যানজট এড়িয়ে মন্ত্রীদের সময়মতো বৈঠকে অংশ নিতে পুলিশি পাহারায় নিয়ে যেতে হয়।


তবে রাজধানী সরিয়ে নিতে চাওয়ার একমাত্র কারণ যানজট নয়। প্রতিবছর ১ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার করে ডুবছে জাকার্তা। শহরের প্রায় অর্ধেক এখন সাগরের উচ্চতার চেয়ে নিচে অবস্থান করছে। জলাভূমির ওপর এটির অবস্থান এখন। শহরটি জাভা সাগর পরিবেষ্টিত এবং এর মধ্য দিয়ে ১৩টি নদী বয়ে চলেছে।


ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রা কেন ৪০ বছর এফবিআইয়ের নজরবন্দী ছিলেন? 


দেশটির বড় আকারের শহুরে এলাকায় ৩ কোটি লোকের বাস। নগরবাসীর জন্য মাত্র ২-৪ শতাংশ অপরিশোধিত পানি শোধন করা হয়।



দেশটির সরকারের আশা, এই পরিবর্তনের ফলে প্রায় এক কোটি মানুষে ভারাক্রান্ত জাকার্তা শহর, যা প্রায়ই বন্যায় ডুবে যাওয়ার মতো দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে- তার অনেকটাই সমাধান হবে। প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ পানি তোলায় জাকার্তা বিশ্বের দ্রুত তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। জাকার্তার উত্তরের কিছু অংশ প্রতিবছর প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার করে ডুবে যাচ্ছে। 


দেশটির জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনামন্ত্রী সুহারসো মনোয়ারফা বলেছন, অন্তত ৮০টি নামের মধ্য থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইদাদো নতুন নাম বাছাই করেছেন। কেননা এটি দেশটির ভূতত্ত্বকে প্রতিফলিত করে।


রাজধানী পরিবর্তনে ইন্দোনেশিয়া সরকার প্রাথমিকভাবে ৩২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে বলে জানিয়েছে। এই ব্যয়ের পরিমাণ ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক ইতিহাসে একক বৃহৎ কোনো অবকাঠামো ব্যয়। 


আধুনিক বিশ্বে রাজধানী পরিবর্তনের ঘটনা অবশ্য এটিই প্রথম নয়। এর আগে ব্রাজিল, নাইজেরিয়া, কাজাখস্তান, বলিভিয়া, পর্তুগাল, মিয়ানমার ও পাকিস্তান তাদের রাজধানী পরিবর্তন করেছিল। তবে পরিবেশগত ভাবনায় এটিই প্রথম নজির।